সুধন্যপুর মাদরাসা

কুরবানি ইসলামে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। এটি শুধু পশু জবাইয়ের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং আল্লাহর প্রতি বান্দার আনুগত্য, ত্যাগ ও ভালোবাসার এক عظیم الشان নিদর্শন। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে কুরবানির বহু ফযীলত ও তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় আমল, গুনাহ মাফের মাধ্যম, অশেষ সওয়াব লাভ, কিয়ামতের দিন মুক্তির উপায়, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন, হযরত ইবরাহিম (আ.) এর সুন্নাত সহ ইত্যাদি অনেক ফযীলত রয়েছে। সুতরাং, শুধু গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়, বরং একমাত্র আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি ও তাঁর বিধান পালনের উদ্দেশ্যে বিশুদ্ধ নিয়তে কুরবানি করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। এটি তাকওয়া অর্জন এবং আল্লাহর অশেষ রহমত ও মাগফিরাত লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ।

কুরবানীর ফযীলত

আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় আমল

কুরবানি শুধু একটি পশু জবাই নয়; এটি এক মহান ত্যাগ ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন – “আদম সন্তানের জন্য কুরবানির দিন যে কাজ করা হয়, তার চেয়ে আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় কোনো কাজ নেই।”
(তিরমিজি)

 আল্লাহ বলেন – “আল্লাহর কাছে তাদের মাংস বা রক্ত পৌঁছায় না, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।”
(সূরা হজ্জ: ৩৭)

গুনাহ মাফের মাধ্যম

কুরবানি শুধু এক ইবাদত নয়, এটি বান্দার জন্য গুনাহ মাফের এক মহান সুযোগ। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন – “কুরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়, তাই তোমরা খুশি মনে কুরবানি করো।”
(তিরমিজি)

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে – “কুরবানির পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে এক একটি সওয়াব এবং প্রতিটি পশমের নিচের রক্তবিন্দুর বিনিময়ে গুনাহ মাফ করা হয়।”
(ইবনে মাজাহ)

কিয়ামতের দিন মুক্তির উপায়

কুরবানি কেবল পশু জবাই নয়; সঠিক নিয়ত, আচরণ ও সামাজিক আদানপ্রদানের সাথে এটি কিয়ামতের দিনে বান্দাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি, রহমত ও রেহাই লাভে সাহায্য করতে পারে।

আল-কুরআনে বলা আছে : “অবশ্যই আল্লাহর কাছে তাদের মাংস ও রক্ত পৌঁছায় না, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া (আল্লাহভীতি)।” (সূরা হজ্জ: ৩৭)

কুরবানি যদি সৎ নিয়ত, তাকওয়া, শরীয়তানুযায়ী করা হয়, তবে কিয়ামতের দিন সাক্ষ্য ও মুক্তির উপায় হিসেবে কাজ করতে পারে।

আল্লাহর নৈকট্য অর্জন

কুরবানি এমন এক ইবাদত, যার মাধ্যমে মুমিন বান্দা তার প্রভুর সর্বাধিক নিকটে পৌঁছার সুযোগ পায়। এটি শুধু একটি পশু জবাই নয় – বরং আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, আনুগত্য ও ত্যাগের প্রকাশ।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন – “কুরবানির দিনে মানুষের জন্য আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো কুরবানি করা।”
(তিরমিজি)

অর্থাৎ, কুরবানির মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রতি তার ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রকাশ করে, আর আল্লাহ তাকে নিজের নিকটে টেনে নেন।

শায়খ দা.বা. এর ভিডিও বার্তা

Scroll to Top